নবনির্বাচিত এমপিদের শপথ বৃহস্পতিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাইল ছবি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবনির্বাচিত এমপিদের শপথ পাঠ আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) দুই দফায় অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তাদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। মঙ্গলবার নতুন সংসদ সদস্যদের নামে গেজেট জারি করেছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে ১০ জানুয়ারির আগেই শপথ নেবেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তীতে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীরা শপথ নেবেন। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি তাদের শপথ পড়াবেন। এর মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যেই নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা হয়ে যাবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিরোধী দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। এদিকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আগামী ৩ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) শপথ নেবেন।
এদিকে নতুন মন্ত্রিসভা কেমন হবে তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। গতবারের চেয়ে মন্ত্রিসভা বড় না ছোট হবে, মহাজোটের শরিকদের কেউ এবারও মন্ত্রী থাকবেন কিনা এসব বিষয়ে উঠে আসছে আলোচনার টেবিলে।
এছাড়া বর্তমান মন্ত্রীদের কেউ বাদ পড়ছেন কিনা বা নতুন মুখ যোগ হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে একই সঙ্গে আগ্রহ এবং উৎকণ্ঠা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের মাঝে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন মন্ত্রিসভায় কারা স্থান পাচ্ছে এটা একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।
তিনি যাদের চাইবেন এখানে তাদেরই জায়গা হবে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার আমন্ত্রণ জানাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
একই সঙ্গে নতুন সদস্যদের জন্য গাড়িও প্রস্তুত রাখবে সরকারি যানবাহন অধিদফতর (পরিবহন পুল)। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের দফতর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে মন্ত্রিসভা গঠনের দাফতরিক কাজগুলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ করে থাকে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (বিধি ও সেবা) শফিউল আজিম সোমবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের এ সংক্রান্ত ফাইল প্রস্তুত করাই রয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট জারি হলে এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে।’ যখন নতুনরা শপথ নেবেন তখন অটোমেটিক্যালি বর্তমান মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন হয়। ১২ জানুয়ারি গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা। তখন শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে ৪৮ সদস্যবিশিষ্ট নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়।
ওই সরকারে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৯ জন মন্ত্রী, ১৭ প্রতিমন্ত্রী এবং দু’জন উপমন্ত্রী ছিলেন। পরে কয়েক দফা রদবদল হওয়ায় মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়ায় ৫২ সদস্যের।
জানা গেছে, মঙ্গলবার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নামে গেজেট জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। মোট ২৯৮ জন সংসদ সদস্যের নামে গেজেট জারি করা হয়। বাকি দুটির মধ্যে গাইবান্ধা-৩ আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় সেখানে নির্বাচন হয়নি।
এ ছাড়া ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনের তিনটি কেন্দ্রে পুনঃনির্বাচন করতে হবে বলে সেখানে ফলাফল স্থগতি রয়েছে। বিধান অনুযায়ী গেজেট জারির তিন দিনের মধ্যে শপথ নিতে হবে।
সে লক্ষ্যে আগামীকাল সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য সংসদ সচিবালয় পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে। কক্ষের ধারণক্ষমতা কম হওয়ায় সেখানে দুই দফায় শপথ হবে।আইন শাখার কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার সংসদ ভবন ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে সাজসাজ রব। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে শপথ কক্ষ।
শপথ পড়ানোর বিষয়ে সংবিধানে ১৪৮-এর ২ (ক)-তে বলা হয়েছে, ‘সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে এই সংবিধানের অধীন এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তদুদ্দেশ্যে অনুরূপ ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোনো ব্যক্তি যেকোনো কারণে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ পাঠ পরিচালনা করিতে ব্যর্থ হইলে বা না করিলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার উহার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে ওই শপথ পাঠ পরিচালনা করিবেন, যেন এই সংবিধানের অধীন তিনিই ইহার জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি।’
সরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে সংসদ অধিবেশন ডাকার বিষয়ে সংবিধানে বাধ্যবাধকতা আছে। এ প্রসঙ্গে সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (২)-এর (১) দফায় বলা হয়েছে, ‘সংসদ সদস্যদের যেকোনো সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হইবার ত্রিশ দিনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য সংসদ আহ্বান করা হইবে।’
নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নামে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে সরকারিভাবে ফল ঘোষণা করা হয়। কাজেই গেজেট প্রকাশের দিন থেকে এক মাসের মধ্যে সংসদের প্রথম অধিবেশন বসবে।
৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৯৮ আসনের ফলাফলে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ ২৫৯, জাতীয় পার্টি ২২, ওয়ার্কার্স পার্টি তিন, জাসদ দুই, বিকল্পধারা বাংলাদেশ দুই, তরিকত ফেডারেশন এক, বাংলাদেশ জাসদ এক, জাতীয় পার্টি (জেপি) একজন জয়ী হয়েছেন। বিএনপি জোট অর্থাৎ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র সাতটি (বিএনপি পাঁচ, গণফোরাম দুই) আসন। স্বতন্ত্রসহ অন্যরা জয় পেয়েছেন তিনটি আসনে।
বিএসআরএফ সংলাপে হাসানুল হক ইনু : মঙ্গলবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’-এ অংশ নেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ)আয়োজিত সংলাপে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ৩ জানুয়ারি (আগামীকাল) নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন। মহাজোটই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, এটা অবধারিত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা নতুন সরকার পাব।
নতুন সরকারের আকার কেমন হবে এবং মন্ত্রিসভায় কতজন নতুন মুখ আসতে পারে- জানতে চাইলে জাসদ একাংশের সভাপতি ইনু বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার, এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে যোগ্য ও কার্যকরী লোক দিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবিধানিক ও আইনগত নিয়ম রক্ষা করেই শপথ নেবেন সংসদ সদস্যরা। আর মন্ত্রিসভাও গঠন করা হবে।’
নতুন মন্ত্রিসভা কবে গঠন করা হবে- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সময়টা আমি বলতে পারব না। সংসদ সদস্যরা শপথ নেয়ার পরই মন্ত্রিসভায় যাওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তাই এটা প্রধানমন্ত্রী ও তার দফতরই নির্ধারণ করবে কবে, কখন ও কাদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে।’
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে দেশ আমরা দেখেছি, সেখানে মুসলিম লীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা পক্ষ ত্যাগ করেন এবং জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের কর্মীদের সঙ্গে মিলেমিশে নৌকার বিজয় ও বিপ্লব এনে দেন।
১৯৭০-এর নির্বাচন যেভাবে মুসলিম লীগের যুগের অবসান ঘটিয়েছে; একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সেভাবে ১৯৭৫ সাল-পরবর্তী সামরিক শাসন মদদপুষ্ট সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপি-জামায়াত যুগের অবসানের সূচনা ঘটাল।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত যখনই পরাজিত হয় তারা নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে। ১৯৯৬ সালে ও ২০০৮ সালেও তারা একই কাজ করে। এটা তাদের রাজনৈতিক বদাভ্যাস। এই বদাভ্যাসের সূত্র ধরে তারা আগামীতে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করবে।’
দেশবাসীকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাসদ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি পুনর্নির্বাচনের দাবির মধ্য দিয়ে একটা ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করল, যা অশনি সংকেত হিসেবে দেখা দিচ্ছে।’
নতুন বছরে টেলিভিশনের সাংবাদিকের জন্য কোনো সুখবর আছে কিনা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে ওয়েজবোর্ড গঠন করেছিলাম তার রিপোর্ট মন্ত্রিসভায় গেছে। মন্ত্রীদের নিয়ে যে উপকমিটি হয়েছে ভোটের আগে সেই কমিটির একটি সভা হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভায় সেই সাবকমিটি কাজ করবে।
রিপোর্টে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য ওয়েজবোর্ড দিতে হবে বলে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা আছে। তাই ওটা দেয়ার জন্য প্রাথমিক প্রশাসনিক কাজটা সম্পন্ন হলে নতুন সরকার এবং তথ্য মন্ত্রণালয় এটা সম্পন্ন করবে। তাই নতুন বছরে আমি আশা করছি ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীদের জন্য নতুন ওয়েজবোর্ড হবে।’
নিউজওয়ান২৪/আরএডব্লিউ
- ভাষা আন্দোলনের আদ্যেপান্ত
- মহান বিজয় দিবস আজ
- সেনা কল্যাণ সংস্থার শিক্ষামূলক বৃত্তির চেক পেল ২৯৩ শিক্ষার্থী
- বারবার ধর্ষন করা হয়েছে: সুকির দেশ থেকে পালিয়ে আসা নারীদের আর্তনাদ
- ‘বাড়াবাড়ি করছে, দিছি...সরাইয়া’
- পিলখানা হত্যাকাণ্ড: বিজিবির সব ইউনিট শাহাদাত বার্ষিকী পালন করবে
- ট্রেনের টিকিট কাটতে লাগবে এনআইডি নম্বর
- সেনাকল্যাণের ৪৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দরবার অনুষ্ঠিত
- কুয়েতের সঙ্গে তিনটি নয়, চারটি চুক্তি স্বাক্ষর
- খালেদার আপিল শুনানির সময় ইসিতে যা ঘটেছে
- পাকিস্তানি স্কুলের মতে ‘পাঞ্জাবি অশ্লীল ভাষা’!
- আসল নকল থেকে সাবধান: ভয়াবহ বিপদ ঘটে যেতে পারে!
- অনিরুদ্ধ অপহৃত নাকি আত্মগোপনে!
- বাংলাদেশের রাজনৈতিক জরিপ ও সত্য-মিথ্যা
- ২১ ফেব্রুয়ারি
মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ